ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষকে মোটামুটি হেসে খেলে গুঁড়িয়ে দেয়ার দৃশ্যটা খুবই পরিচিত হয়ে গেছে ম্যানচেস্টার সিটির জন্য। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে পুরোপুরি উলটো দৃশ্য দেখতে হচ্ছে। দুর্দান্ত সেই সিটি সেই একই লীগ প্রতিপক্ষের সামনে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। গত মৌসুমেও তামান ফুটবল বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে লিভারপুলের সঙ্গে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল পেপ গার্দিওলার দলকে। অবশ্য ২০১৭-২০১৮ এর লিভারপুল টপ ফেভারিটে হিসেবে বিবেচিত ছিলো। কিন্তু টটেনহাম হটস্পারের বিপক্ষে গার্দিওলার দল এরকম বিদায় নিবে সেটি কয়জনই বা কল্পনা করেছিলো? কিন্তু সেটিই হলো। টটেনহামের সাথেই হেরে বিদায় নিতে হলো সিটিকে। অবশ্য এর জন্য অনেকের মতো গার্দিওলা ভারকেও দুষ দিতে পারেন। তাতেকি বদলানো যাবে ফলাফল?
দুর্দান্ত এক ম্যাচ উপভোগ করলো ফুটবল বিশ্ব। গোলের পর গোল দেখা।
চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ের জন্য পেপ গার্দিওলা দুহাত ভরে টাকা খরচ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। সিটি এতো টাকা খরচ করেছে চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ের জন্যই। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে সিটির এমন বিদায়ের পর একটি প্রশ্ন বারবার ফিরে আসছে, বিপুল টাকা খরচ করে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে পারে এমন দল কেনা সম্ভব আদো সম্ভব?
এ প্রজন্মের অন্যতম সেরা কোচ হিসেবে গার্দিওলাকে গণ্য করা হয়। তার ১১ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে যত ট্রফি জিতেছেন অনেক ক্লাবের ইতিহাসেও সেটা নেই। চ্যাম্পিয়নস লিগ, ক্লাব কাপ, উয়েফা সুপার কাপ, লা- লিগা, বুন্দেসলিগা, প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ কাপ, লিগ কাপ, —কি জেতেননি তিনি? কিন্তু এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের ব্যর্থতা পেপ গার্দিওলাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ দিচ্ছে। গার্দিওলার চ্যাম্পিয়ানস লীগ জয়ের কীর্তি শুধু জিনেদিন জিদানই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে টানা ৩বার জিতে টপকাতে পেরেছেন। কিন্তু বার্সেলোনার হয়ে পাওয়া সেই চ্যাম্পিয়ানস লীগের ট্রফি নিয়ে গার্দিওলার মতো কোচকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে কেইবা ভেবেছিলো?
তাই অনেক কিংবদন্তি এখন মুখ খুলছেন। অনেকেই মত প্রকাশ করছেন যে টাকা দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগ জয় করা যায় না। অনেকেই উদাহরণ হিসেবে পিএসজি’র উদাহরন দিচ্ছেন। কাতারি অর্থের ঝনঝনানিতে পিএসজিও জিততে চেয়েছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ। এ লক্ষে তারা বিপুল বেতন সুবিধা দিয়ে এমবাপ্পে- নেইমারকে একই ছাদের নিচে এনেছিল। কিন্তু তাদের সে স্বপ্নে বালি দিয়ে পিএসজি বিদায় নেয়।
জুভেন্টাসও চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ের জনয় এ সংস্করনের রাজা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পেছনে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি বিনিয়োগ করতে দ্বিধা করেনি। কোয়ার্টার ফাইনালে জুভেন্টাসকে বাদ পড়ার হাত থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগের রাজা পারেননি বাচাতে ।
গত তিন মৌসুমে সিটির হয়ে গার্দিওলা প্রায় ৫২৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করেছেন। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে সেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দিতে পারছেন না গার্দিওলা।
এবারের হারে একটা প্রশ্ন উঠেই যাচ্ছে, গার্দিওলার কোচিংইয়ের ক্যারাশমাতিতে বার্সেলোনা জিতেছিলো? নাকি মেসি, ইনেয়েস্তার মতো খেলোয়ার এবং বার্সেলোনা ছিলো বলেই গার্দিওলা চ্যাম্পিয়নস লীগ জিতেছিলেন?