গত কিছুদিন বাংলাদেশ অসাধারণ ক্রিকেট খেলে আশা ও প্রত্যাশাকে আকাশচুম্বী করে দিয়েছিল।
ইংলিশ কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ড বরাবরই কঠিন প্রতিপক্ষ৷ এরপরও সাম্প্রতিক ফর্মের কারণে বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকেই আজ আশায় ঘর বেধেছিলেন। আরোও একটি মহাকাব্যিক জয় দেখার জন্য লন্ডনের ওভালে বাংলাদেশিরা সমর্থকগণও মাঠে হাজির হয়েছিলেন।
আজ বাংলাদেশের দিনটা শুরু হয় টস হেরে। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হলেও সাকিবের আউটের পর আর কোন ব্যাটসম্যান পারেননি দলের হাল ধরতে। দলীয় ১৫১ রানে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে সাকিব বিদায় নেন। শেষদিকে সাইফুদ্দিনের ব্যাটিং ঝড়ে ২৪৪ রানের বন্দরে পৌছায় দল।
জবাবে নিউজিল্যান্ড উড়ন্ত সুচনা করে। রান রেট খুব উপরে রেখে এগিয়ে নেয় তাদের রান। ব্যাটিংয়ের পর আবারো দলের দায়িত্ব কাধে তুলে নেন সাকিব। দলের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়ে ভালো একটি ব্রেক থ্রু এনে দেন তিনি।
এরপরও নিউজিল্যান্ড ঠান্ডা মাথায় ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকে। ৩য় উইকেট জুটিতে তারা ১০৫ রান যোগ করে। বাংলাদেশের আশা যখন দূর আকাশের তারা তখনি উইলিয়ামসন ও লাথামকে ২ রানের ভিতরে আউট করে খেলায় উত্তেজনা ফিরিয়ে আনেন মিরাজ।
নিউজিল্যান্ড তখন ১৬২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবার খেলায় ফিরে আসার চেষ্টা করতে থাকে। রস টেইলর অসাধারণ খেলছিলেন৷ অধিনায়ক মাশরাফি বিভিন্ন ভাবে বোলার পরিবর্তন করে, একের পর এক টেকনিক প্রয়োগ করে যাচ্ছিলেন উইকেট নেয়ার জন্য। দলীয় ১৯১ রানে মোসাদ্দেকের বলে মুশফিকের অসাধারণ এক ক্যাচে আউট হন রস টেইলর।
আউট হওয়ার আগে ৬টি চারে ৯১ বলে ৮২ রানের এক ঝকমকে ইনিংস খেলেন তিনি।
টেইলরের আউটের পর নিউজিল্যান্ড তাদের রানের চাকা থামায়নি৷ বাংলাদেশ যখন হেরে যাচ্ছি যাচ্ছি করছে, মাঠের দর্শক বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখনই সাইফুদ্দিন একটা ব্রেক থ্রু এনে দেন৷ ২১৮ রানে ডি গ্রান্ডডমি কে ফিরিয়ে দেন। পরের ওভারে মুসাদ্দেক এসে নিসাম ২৫(৩২) কে ফিরিয়ে দেন৷ শূন্য রানে টানা ২ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশও ঝেকে বসার চেষ্টা করেন। গ্যালারির দর্শক যারা ফিরে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারাও বসে পড়েন।
নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ২১৮/৭, ওভারের দিকে তাকিয়ে লাভ নেই জেনে সবাই উইকেট নেয়ার চেষ্টায় ছিলেন। অসাধারন ক্যাপটেন্সি দিয়ে দলকে জেতানোর চেষ্টা করছিলেন ক্যাপটেন ম্যাশ। কিন্তু নিউজিল্যান্ড আর কোন সুযোগ দিতে চাচ্ছিল না৷ জয় থেকে ৭ রান দূরে থাকতে হটাত আবারো দৃশ্যপটে সাইফুদ্দিন। বোল্ড আউট করে দিলেন ম্যাট হেনরিকে। ফুলটস বলে মিডিল স্টাম্প উড়িয়ে দেন তিনি।
আবারো আশা। স্কোর তখন ২৩৮/৮, নিউজিল্যান্ড মাত্র ৭ রান দূরত্বে আর বাংলাদেশের দরকার ২ উইকেট। দুটি ভালো বল হলেই বাংলাদেশ জিতে যাবে। আর একটি বল নিউজিল্যান্ড ভালো খেললে তাদের জয় নিশ্চিত।
কিন্তু না, সাইফুদ্দিন আর সে সুযোগ দিলেন না। এক ওভারে আশা দেখিয়েও পারলেন না খুশি মুখে বিদায় নিতে৷ ১৭ বল হাতে রেখে ৪৮ তম ওভারের প্রথম বলেই নিউজিল্যান্ড ২ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে।
৮২ রানের অসাধারণ এক ইনিংসের জন্য রস টেলরকে ম্যান অব দা ম্যাচ পুরষ্কার দেয়া হয়।
বাংলাদেশের হয়ে সাকিব, মিরাজ, মুসাদ্দেক ও সাইফুদ্দিন ২ টি করে উইকেট নেন।
বাংলাদেশ– ২৪৪/১০ (৪৯.২ ওভার)
নিউজিল্যান্ড– ২৪৮/৮ (৪৭.১ ওভার)